Saturday 19 October 2013

জলার ধারে এক ব্যাং তার পরিবার নিয়ে বাস করত। সেই ব্যাঙের অনেকগুলো বাচ্চা ছিল। একদিন একটি ব্যাঙের বাচ্চা জলার পাশে স্যাঁতস্যাঁতে মাঠে ঘুরছিল। সেই মাঠে তখন একটি ষাঁড় চরছিল। বিশাল ষাঁড়টাকে দেখে বাচ্চা ব্যাঙটি প্রথমটায় একটু হকচকিয়ে গিয়েছিল। পরে সাহস করে দূর থেকে তাকে ভালো করে দেখতে লাগল। আর যতই তাকে দেখতে লাগল ততই সে অবাক হয়ে যেতে লাগল। তারপর এক সময় সে ঘরে ফিরে এল।
             ফিরে এসে ব্যাঙের বাচ্চাটি তার মাকে বলল মা, মা, আজকে মাঠে আমি একটা বিরাট জানোয়ার দেখে এলাম। সে যে কত বড়ো আর মোটা তা না দেখলে তুমি বুঝতে পারবে না।
             ব্যাং বাচ্চাটির মা তখন একটু অহংকারের স্বরে বলল- অ্যাঁ, কি বললি? - সে আমার চেয়েও বড়ো দেখতে?
             বাচ্চাটি হাসতে হাসতে বলল- তুমি কি বলছ, মা। তোমার চেয়ে সেই জানোয়ারটা অনেক অনেক গুণ বড়ো।
             মা- ব্যাঙটি তখন তার পেটটা ফুলিয়ে বলল, 'এই এত বড়ো?'
             বাচ্চা ব্যাঙটি হা হা করে  হেসে বলল- তুমি তার একশো ভাগ এর এক ভাগও না। মা- ব্যাঙটি তখন তার পেটটা আরও ফুলিয়ে বলল- এবার! বাচ্চা ব্যাঙটি তখন হাসতে হাসতে বলল- 'মা, তুমি হাজার ছেস্তা করলেও তার মত বড়ো হতে পারবে না।
             ব্যাং- বাচ্চাটির এই কথা শুনে মা- ব্যাং রেগেমেগে তার পেটটা আরও বড়ো করে ফুলাতে লাগল আর ওমনি ফটাস করে ফেটে গেল তার পেটটা। মা- ব্যাঙটি মারা গেল।

নিতিঃ  অহংকার করা কোনও সময়ই উচিত নয়। 

Friday 18 October 2013


জলার ধারে এক কাঁকড়া তার পরিবার নিয়ে বসবাস করত। মা-কাঁকড়ার অনেকগুলো বাচ্চা ছিল। বাচ্চারা জলার ধারে সারাদিন খেলা করে বেড়াত। তারপর সন্ধে হলে তারা ঘরে ফিরে আসত। মা-কাঁকড়া তার বাচ্চাদের সবসময় নানারকম উপদেশ দিত। কি করে ভালো হয়ে চলতে হয়, কি করে বড়ো হতে হয়, কি করে ভালো হওয়া যায়- এইসব পইপই করে মা-কাঁকড়া তার বাচ্চাদের শেখাত। বাচ্চারাও মা-কাঁকড়ার কথামতো চলত।
            একদিন মা-কাঁকড়া তার ছেলেকে বলল, ‘শোন, একটা কথা বলি- কখনও পিছনের দিকে হাঁটবি না। আর কখনও ভিজে পাথরের গায়ে গা ঘষবি না। বুঝলি?
            ছেলেটি বলল, ‘বুঝেছি মা। তবে তুমি নিজে একবার সামনে হেঁটে দেখাও না মা, তাই দেখে আমি আমি সামনের দিকে হাঁটা শিখব।‘
            কাঁকড়া-মা ছেলের এই বুদ্ধির প্রকাশ দেখে মনে মনে তারিফ করল। আর মনে মনে ভাবল ছেলে তো বেশ বুদ্ধিমান হয়ে উঠেছে।

নীতিঃ উপদেশের চেয়ে দৃষ্টান্ত অনেক বেশি শিক্ষাপ্রদ।

এক বাগানে একটি গোলাপ গাছ ছিল। সেই গোলাপ গাছটির পাশেই ছিল একটি অমরত্ব গাছ। দুজনেই পাশাপাশি বেড়ে উঠেছিল। আর দুজনের মধ্যে ভীষণ বন্ধুত্ব।
            একদিন অমরত্ব গাছটি গোলাপকে ডেকে বলল, ‘ভাই গোলাপ, তুমি কি সুন্দরই না দেখতে, আর তোমার সুগন্ধে মনটা ভরে যায় আমার। তুমি মানুষ ও দেবতা সকলেরই প্রিয়। তোমাকে আমি অভিনন্দন জানাই।‘
            গোলাপ তখন মৃদু হেসে বলল, ‘তুমি ঠিকই বলেছ। তবে, আমার এই জীবন অতি ক্ষণস্তায়ি। আর গাছ থেকে আমায় কেউ না ছিঁড়লেও আমি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে যাই, অথচ তুমি কেবলই বিকশিত হও; তুমি এখনও যেমন, পরেও ঠিক তেমনই থাকো। আমার মনে হয় স্বল্পকাল বিলাসসুখ ভোগ করে মৃত্যুর কবলে পড়ার চেয়ে অতি অল্পে সন্তুষ্ট থেকে দীর্ঘকাল শান্তিতে বেঁচে থাকা অনেক ভালো।‘

নীতিঃ স্বল্প সুখের চেয়ে সুদীর্ঘ শান্তির জীবন অনেক ভালো।